সাবিত আল হাসান
দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা অবশেষে চোখ উন্মোচন করে দিয়েছে গঞ্জে আলী খালের বেহাল দশার চিত্র। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল পরিনত হয়েছিলো ময়লার ভাগারে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু মেয়র ও সাংসদের সাহায্য চাইলে টনক নড়ে প্রশাসনের। আনুষ্ঠানিক ভাবে খাল উদ্ধার কার্যক্রম চালুর পাশাপাশি নাসিকের উদ্যোগে পার্ক নির্মানের ঘোষণা এলো মেয়র আইভীর কাছ থেকে।
কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রথমেই ভেঙ্গে দেয়া হয় খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা। মাইকিং করে সরে যাবার নির্দেশ দেয়া হয় দখলদারদের। অনেকেই নির্দেশনা মেনে সরিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের মালামাল। তবে তাদের দাবী খুব দ্রুতই যেন বাস্তবায়ন হয় এসকল প্রকল্পের কাজ। কারন এর আগেও এমন উচ্ছেদ চললেও তা মাঝপথে থেমে যায়। তাই এর পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চান না স্থানীয়রা।
সরজমিনে দেখা যায়, খালের উপর অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছরে জন্মেছে বেশ বড় বড় গাছ। পলিথিনের ময়লা জমে আটকে আছে স্বাভাবিক প্রবাহ। ভেকু দিয়ে স্থানটি পরিষ্কার করলেও খুব অল্প সময়েই আবারও ভরাট হয়ে আছে খালটি। তবে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা বলছেন ধীরে ধীরে পুরো খালটিই পরিষ্কার করা হবে।
জানা যায়, গঞ্জে আলী খালে এক সময় শীতলক্ষ্যা থেকে নৌকা ও বড় ট্রলার প্রবেশ করতো। বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিলো হাজীগঞ্জ ও তল্লা এলাকাগুলো। নদী ও খাল সংলগ্ন এলাকাটির অলিগলিও বেশ ঘিঞ্জি। কারন মানুষের সভ্যতা যুগে যুগে বিভিন্ন জলাধারকে ঘিরেই গড়ে উঠে। কিন্ত সেই খাল ধ্বংস হয়েছে কালের বিবর্তনে। একদিকে খালের প্রতি অবহেলা, অন্যদিকে খাল দখল। তার সাথে যুক্ত হয়েছে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার অভ্যাস। সব মিলিয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই খালের চিত্র। তবে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে নাসিকের পরবর্তী পদক্ষেপে এ খালের যৌবন ফিরিয়ে আনা হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
নতুন করে সংস্কারের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু বলেন, পুরো খালটি উদ্ধারের কাজ চলছে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার বিস্তৃত এই খাল উদ্ধারে স্বাভাবিক ভাবেই সময়ের প্রয়োজন। খালের পাশেই উচু করে নির্মান করা হবে রাস্তা। এছাড়া দুপাশে বাধ দিয়ে স্থায়ী ভাবে পার্ক নির্মান করারও পরিকল্পনা রয়েছে মেয়রের। বসার যায়গা ও গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্য্য বর্ধনের পরিকল্পনা করছে নাসিক।
তবে কবে নাগাদ এসকল কাজ শুরু হবে তা বলতে পারেননি তিনি। কাউন্সিলর বলেন, আগামী বাজেটে এই খালের উপর বিল আনা হবে। প্রস্তাবিত ঐ বাজেট পাশ হলেই কাজ শুরু হবে। তাছাড়া এখনও নির্ধারিত কোন বরাদ্ধ রাখা হয়নি। তাই অগ্রিম খরচের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী আবুল আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।